Nazihar News Network
News from Nazihar It Solution

কবিরাজ সেজে বাসায় ঢুকে লুটপাট, ‘প্রত্যাশামতো’ অর্থকড়ি না পেয়ে হত্যা: র‍্যাব

বাসা লুট করার সময় ‘প্রত্যাশামতো’ অর্থকড়ি না পেয়ে ঢাকার আশুলিয়ায় একই পরিবারের তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার এক দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব বলছে, কবিরাজ সেজে ওই বাসায় গিয়েছিলেন তাঁরা। চিকিৎসার নাম করে পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করার পর লুটপাট চালান তাঁরা।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন সাগর আলী (৩১) ও তাঁর স্ত্রী ইশিতা বেগম (২৫)। গতকাল সোমবার রাতে গাজীপুরের শফিপুর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র‌্যাব বলছে, এর আগে ২০২০ সালে টাঙ্গাইলের মধুপুরে একই কৌশলে একই পরিবারের চারজনকে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় সাগর জড়িত ছিলেন। সে সময় র‌্যাব-১২-এর সদস্যরা তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। মাত্র ২০০ টাকার জন্য সাগর ওই খুন করেছিলেন।

বাসা লুট করার সময় ‘প্রত্যাশামতো’ অর্থকড়ি না পেয়ে ঢাকার আশুলিয়ায় একই পরিবারের তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার এক দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব বলছে, কবিরাজ সেজে ওই বাসায় গিয়েছিলেন তাঁরা। চিকিৎসার নাম করে পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করার পর লুটপাট চালান তাঁরা।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন সাগর আলী (৩১) ও তাঁর স্ত্রী ইশিতা বেগম (২৫)। গতকাল সোমবার রাতে গাজীপুরের শফিপুর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র‌্যাব বলছে, এর আগে ২০২০ সালে টাঙ্গাইলের মধুপুরে একই কৌশলে একই পরিবারের চারজনকে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় সাগর জড়িত ছিলেন। সে সময় র‌্যাব-১২-এর সদস্যরা তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। মাত্র ২০০ টাকার জন্য সাগর ওই খুন করেছিলেন।

সাগর ও ইশিতাকে গ্রেপ্তারের পর আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, সাড়ে তিন বছর কারাগারে থাকার পর চলতি বছরের জুনে জামিনে মুক্তি পান সাগর। এর চার মাসের মাথায় এক পরিবারের তিনজনকে খুনের ঘটনা ঘটালেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কবিরাজ সেজে আশুলিয়ায় ভুক্তভোগীদের বাসায় গিয়েছিলেন সাগর ও ইশিতা। চিকিৎসার নাম করে পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন তাঁরা। পরে বাসায় লুট করতে গিয়ে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা পান এই দম্পতি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনজনকে খুন করেন।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার একটি বাড়ির চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে বাবুল হোসেন (৫০), শাহিদা বেগম (৪০) ও তাঁদের ছেলে মেহেদী হাসান জয়ের (১২) অর্ধগলিত গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। বাবুল ও শাহিদা পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তাঁদের ছেলে মেহেদী হাসান স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত।

বাবুলের গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার গরুড়া (ফুলবাড়ী) গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মৃত সইর উদ্দিন।

যেভাবে তিনজনকে খুন

র‌্যাব জানায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাবুল হোসেন সাভারের বারইপাড়া এলাকায় একটি কবিরাজি ও ভেষজ ওষুধের দোকানে গিয়ে শারীরিক সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। এ সময় সাগর পাশের একটি দোকানে চা খাচ্ছিলেন। সাগরের সঙ্গে কবিরাজের কথোপকথন শুনে জানতে পারেন, চিকিৎসায় ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করেও কোনো ফল পাননি বাবুল। পরে কৌশলে বাবুলকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন সাগর। কথা বলে সাগর বুঝতে পারেন, ভেষজ চিকিৎসার ওপর আস্থা আছে বাবুলের। তখন সাগর জানান, তাঁর (সাগর) স্ত্রী একজন ভালো কবিরাজ। বাবুলের সমস্যার সমাধান করে দিতে পারবেন। একপর্যায়ে চিকিৎসার জন্য বাবুলের সঙ্গে সাগর ৯০ হাজার টাকার চুক্তি করেন। ওই দিন রাতেই স্ত্রীকে নিয়ে বাবুলের বাসায় যান সাগর।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, মৌখিক ওই চুক্তির পর সাগর তাঁর স্ত্রীকে বিষয়টি জানান। তাঁরা পরিকল্পনা করেন বাবুলের বাসায় গিয়ে ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসার কথা বলে পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করবেন। এরপর বাসায় থাকা টাকাপয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সাগর গাজীপুরের মৌচাক এলাকার একটি ফার্মাসি থেকে এক বাক্স (৫০টি) ঘুমের ওষুধ কেনেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শরবতের সঙ্গে ওই ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ভেষজ ওষুধ বলে পরিবারের সবাইকে খাইয়ে দেন সাগর ও ইশিতা। এতে তিনজনই অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর সবার হাত-পা বেঁধে ফেলেন। বাসায় লুটপাট শুরু করেন। কিন্তু মাত্র পাঁচ হাজার টাকা খুঁজে পান তাঁরা। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তিনজনকে বটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন এই দম্পতি। খুনের পর তাঁরা আত্মগোপনে চলে যান।

যেভাবে জামিন পেয়েছেন সাগর

সাগরকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, টাঙ্গাইলের মধুপুরে চার খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর সেখানে রাজনীতিতে যুক্ত এক ব্যক্তির সঙ্গে সাগরের পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তিও খুনের মামলায় কারাগারে আছেন। সাগর কারাগারে ওই ব্যক্তির সেবা-শুশ্রূষাসহ বিভিন্ন কাজ করে দিতেন। ওই ব্যক্তি তাঁর রাজনৈতিক এক প্রতিপক্ষকে খুনের প্রস্তাব দেন সাগরকে। এই শর্তে রাজি হওয়ার পর সাগরের জামিন হয়।

জামিনে মুক্ত হওয়ার পর কারাগারে থাকা ওই রাজনৈতিক নেতার সহযোগীরা সাগরকে একটি অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যান উল্লেখ করে খন্দকার আল মঈন বলেন, সেখানে সাগরকে তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়। পরে ওই রাজনৈতিক নেতার সহযোগীদের কাছ থেকে সাগর আরও কিছু টাকা নেন। কিন্তু শর্ত অনুযায়ী ওই প্রতিপক্ষকে খুন না করে মুঠোফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান সাগর। একপর্যায়ে তিনি অবৈধ পথে গত জুলাই মাসে পাশের দেশে চলে যান। সেখানে ২০-২৫ দিন অবস্থান করে আগস্টে দেশে ফিরে কুমিল্লায় কিছুদিন থাকেন। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতে (ভাড়া বাসায়) যান। এর দুই দিন পর স্ত্রীকে নিয়ে আশুলিয়ায় ওই পরিবারের তিনজনকে খুন করেন।

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.