Nazihar News Network

সাংবাদিকতায় বন্ধু যখন প্রযুক্তি

এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগের সূচনা হচ্ছে। তাই সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতায় প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কতটা প্রভাব রাখছে বা রাখতে পারছে, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। সাংবাদিকতায়, বিশেষ করে অনলাইন সাংবাদিকতায় যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব, তা নিয়ে এই প্রতিবেদন।

এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগের সূচনা হচ্ছে। তাই সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতায় প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কতটা প্রভাব রাখছে বা রাখতে পারছে, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। সাংবাদিকতায়, বিশেষ করে অনলাইন সাংবাদিকতায় যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব, তা নিয়ে এই প্রতিবেদন।

সিএমএস

কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা সিএমএস হচ্ছে কোনো আধেয় (কনটেন্ট) যেমন লেখা, ছবি, অডিও এবং ভিডিও সম্পাদনার সফটওয়্যার। এতে কনটেন্ট সম্পাদনার পাশাপাশি প্রকাশ করারও ব্যবস্থা থাকে। কোন লেখা কীভাবে সাজানো হবে, ছবি যোগ করা, হাইপারলিংক (অন্য একটি কনটেন্টের ওয়েব ঠিকানা) যোগ করার ব্যবস্থা থাকে এতে। শুধু তা–ই নয়, কনটেন্টগুলো খসড়া আকারে রাখা যায় এবং যখন প্রয়োজন, তখন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যায়। লেখাগুলো বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে সাজানো যায়। পাঠক মন্তব্য করলে তার উত্তর দেওয়া বা মন্তব্য প্রকাশ করার ব্যবস্থাও এতে থাকে।

এসইও

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হলো কোনো ওয়েবসাইটকে গুগল বা অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজে পাওয়ার উপযোগী করে তোলার পদ্ধতি। যখন কোনো বিষয়ে গুগলে তথ্য খোঁজা হয়, তখন অনুসন্ধানের ফলাফলে কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটের তথ্য ও ঠিকানা আসে। কিন্তু কোন ওয়েবসাইটের তথ্য আসবে, তা নির্ভর করে এসইওর ওপর। কোনো একটি সংবাদে বিষয়বস্তুর মূল শব্দগুলো (কি–ওয়ার্ডস) বিশেষভাবে যোগ করতে হয়। যেমন শিরোনামের শুরুতেই খবরের বিষয়বস্তুর মূল শব্দটি রাখতে হবে। খবরের সারসংক্ষেপ মেটা ডেটা হিসেবে যোগ করতে হয়, যা সার্চ ইঞ্জিন সহজে বুঝতে পারে। সাধারণত মানুষ যেসব শব্দ দিয়ে অনুসন্ধান করে, সেগুলো শিরোনাম ও মেটা ডেটায় থাকলে গুগলের সার্চ–ফলাফলের তালিকায় সবার আগে আসার সম্ভাবনা থাকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম বেশ জনপ্রিয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে খুব সহজে পাঠকের কাছে খবর পৌঁছানো যায়। ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্ট বা পেজ খুলে সেখানে নিউজের লিংক দিলে সেখান থেকে পাঠক আসতে পারে। নিউজ শেয়ার করার জন্য ফেসবুক উৎকৃষ্ট মাধ৵ম। কেননা বাংলাদেশের মানুষ ফেসবুকই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে। বাংলাদেশে টুইটার খুব বেশি জনপ্রিয় না হলেও অন্যান্য দেশে বেশ জনপ্রিয়। তাই টুইটার ব্যবহার করে ট্রেন্ডিং বিষয়, তারকাদের সম্পর্কে হালনাগাদ পাওয়া যায়। ইনস্টাগ্রামে সরাসরি লিংক শেয়ার করা যায় না, তবে ছবি শেয়ার করে পাঠক টানা যায়।

কাজে লাগে আরও কিছু প্রোগ্রাম

কাজে লাগে এমন বেশ কিছু দরকারি প্রোগ্রাম বা টুল বিনা মূল্যে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। সাংবাদিকেরা এগুলো ব্যবহার করে তাঁদের কাজ আরও সহজ ও কার্যকর করতে পারেন।

গুগল ডক ও ভয়েস টাইপিং

লেখালেখির জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ব্যবহার বেশি। একই কাজ গুগল ডক দিয়েও করা যায়। এমএস ওয়ার্ড কিনে ব্যবহার করতে হয়, তবে গুগল ডক বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। গুগল ডকে একটি বাড়তি সুবিধা হলো ভয়েস টাইপিং, অর্থাৎ এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে মুখে যা বলা হবে, তা-ই লেখা হবে। এ ছাড়া গুগল ডকে একই সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি লেখা সম্পাদনার কাজ করতে পারেন। এটি ক্লাউডে থাকে বলে যেকোনো সময়, যেকোনো যন্ত্র, যেমন মুঠোফোন বা ল্যাপটপ থেকে ফাইলটি খোলা যায়।

গুগল সার্চ অপারেটর

কোনো বিষয় বা ওয়েবসাইট নির্দিষ্ট করে তথ্য খুঁজতে গুগলে রয়েছে কিছু আলাদা শব্দ বা অপারেটর। যেমন যদি শুধু প্রথম আলো থেকে সাকিব আল হাসানের কোনো সংবাদ খুঁজতে হয়, তবে শুরুতে site: prothomalo.com এরপর সাকিব আল হাসান লিখতে হবে। অর্থাৎ site: prothomalo.com সাকিব আল হাসান। এভাবে লিখলে প্রথম আলোতে সাকিবকে নিয়ে যত সংবাদ হয়েছে, তা গুগলের সার্চ ফলাফলে দেখা যাবে। এ ছাড়া কিছু খোঁজার সময়ও কোনো নির্দিষ্ট শব্দ অবশ্যই যদি থাকে, তবেই ফলাফলে আসবে। এ জন্য ঊর্ধ্ব কমা ব্যবহার করতে হবে। যেমন কর্ণফুলী টানেল নিয়ে কিছু খুঁজতে চাইলে, টানেল যেন অবশ্যই সার্চ রেজাল্টে থাকে। তখন এভাবে লিখতে হবে, কর্ণফুলী ‘টানেল’। নির্দিষ্ট করে কোনো শিরোনাম খুঁজতে হলে লিখতে হবে এভাবে intitle: এরপর শিরোনামটি।

গুগল ট্রেন্ডস

trends.google.com সাইট থেকে ট্রেন্ডিং (চলতি ধারা) সার্চের তালিকা পাওয়া যায়। এ ছাড়া কোন শব্দ বেশি খোঁজা হয়, তা দুই বা ততোধিক শব্দের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এতে কোন দেশে, কোন সময়ে, কোন বিষয়ে বেশি তথ্য খোঁজা হয়েছে, তা জানা যাবে।

টুইটার ট্রেন্ডস ফর ইউ

খুদে ব্লগ লেখার ওয়েবসাইট টুইটারে লগইন করলেই ডান দিকে ‘ট্রেন্ডস ফর ইউ’ নামে একটি প্যানেল থাকে। এতে বাংলাদেশে কোন কোন বিষয় নিয়ে বেশি টুইট হচ্ছে, তা দেখায়। এর মাধ্যমে নেটিজেনদের ব্যাপারে ধারণা পাওয়া সম্ভব। আর সে বিষয়ে সংবাদ করলে দ্রুত পাঠকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

চ্যাটজিপিটি

চ্যাটজিপিটি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন চ্যাটবট। সাধারণ চ্যাটবটগুলো শুধু আগে শেখানো নির্দিষ্ট বাক্যের উত্তর দিতে পারত। কিন্তু চ্যাটজিপিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন হওয়ায় এতে যেকোনো কিছু জানতে চাইলে খুবই চমকপ্রদ উত্তর পাওয়া যায়। তাই কোনো তথ্য জানতে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

কম্পোজ এআই

এটি গুগল ক্রোম ব্রাউজারের একটি ছোট্ট প্রোগ্রাম। কম্পোজ এআই ব্যবহার করে লেখালেখির সময় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সময় বাঁচানো সম্ভব। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লিখে দিতে পারে। দু–একটি শব্দ লেখার পর পরবর্তী শব্দ কী হতে পারে, তার ইঙ্গিত দেয় এটি। চাইলে সেই শব্দ ব্যবহার করতে পারেন।

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.