লালগালিচার রানি’ বলা হয় তাঁকে। সিনেমার রিল থেকে অ্যাওয়ার্ড শো, যেখানেই জেন্ডায়া পা ফেলেন, সেখানেই তাঁর রূপে–গুণে মুগ্ধ হয়ে যান সবাই। এখনকার এই ‘হার্টথ্রব’ তারকাই গত ছয় মাস ধরে ছিলেন লোকচক্ষুর আড়ালে। আড়ালে বলতে সিনেমা আর টিভি সিরিজের শুটিং নিয়ে এতটাই ব্যস্ত ছিলেন যে অ্যাওয়ার্ড শোতে মুখ দেখানোর ফুরসত তাঁর ছিল না। কানাডিয়ান নির্মাতা ডেনি ভিলুনেভের ‘ডিউন ২’ ও ‘ইউফোরিয়া: সিজন থ্রি’ নিয়ে বেশ ব্যস্ত জেন্ডায়া।
![সিনেমা আর টিভি সিরিজের শুটিং নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে অ্যাওয়ার্ড শোতে মুখ দেখানোর ফুরসত ছিল না জেন্ডায়ার](https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2023-02%2Fcca72250-2bd2-4e70-981f-3932cd2b164a%2F214702_01_02.jpg?auto=format%2Ccompress&format=webp&w=640&dpr=1.0)
গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ৭৪তম এমিতে শেষবারের মতো দেখা মিলেছিল ‘এমজে’খ্যাত এই অভিনেত্রীর। টানা দ্বিতীয়বারের মতো সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে রেকর্ড গড়েছেন ‘ইউফোরিয়া’ সিরিজে অভিনয় করে। এমনকি বছরের শুরুতে সর্বকনিষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে নিজের করে নিয়েছেন গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড। কিন্তু এত সব অর্জনের পরও তাঁকে দেখা যায়নি কোনো অনুষ্ঠানে কিংবা মঞ্চে। তাঁর দেখা না পেয়ে আক্ষেপই দেখা গেছে ভক্তদের মধ্যে।
এ সপ্তাহে সেই আক্ষেপই মেটালেন জেন্ডায়া। শুধু মেটালেন বললে ভুল হবে, একপ্রকার ঝড়ই তুলে দিলেন ফ্যাশন দুনিয়ায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন শুধু একটাই নাম—জেন্ডায়া। পরপর দুই দিনে দুই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে জেন্ডায়াকে দেখা গেল চারটি ভিন্ন রূপে। চারটি সাজেই করেছেন বাজিমাত।
২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসেডিনায় বসেছিল এনএএসিপি ইমেজ অ্যাওয়ার্ডের ৫৪তম আসর। সেখানেই দেখা দেন জেন্ডায়া। হাজির হয়েছিলেন ইতালীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ভার্সাচের তৈরি কালো সিল্ক ও নিয়ন সবুজের মিশ্রণে তৈরি স্ট্র্যাপলেস গাউনে। অঁতেলিয়ে ভার্সাচের ২০০২-বসন্ত কালেকশনের অংশ ছিল গাউনটি। হাতে ছিল বুলগারির তৈরি করা হিরার ব্রেসলেট।
তার কিছুক্ষণ পরই জেন্ডায়া হাজির হয়েছিলেন আপাদমস্তক ভিন্ন এক লুকে। মূল অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন আরেক ইতালীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড প্রাডার ১৯৯৩ বসন্ত কালেকশনের টু পিসে। সাদা ক্রপ টপের সঙ্গে ছিল ম্যাচিং ম্যাক্সি কার্ট। ৯০ দশকের ফ্যাশনকে নিজের মতো করে গায়ে চড়িয়েছেন জেন্ডায়া।
![গাউনের ট্রেইন তৈরি করা হয়েছিল ১৯০টি গোলাপ ফুল দিয়ে](https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2023-02%2Ff52f55c1-1826-4bf2-9cb3-df6319bfde29%2F214715_01_02.jpg?auto=format%2Ccompress&format=webp&w=640&dpr=1.0)
ঠিক তার পরদিন, ২৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে বসেছিল এসএজি অ্যাওয়ার্ডের ২৯তম আসর। সেখানেও কম চমক দেখাননি জেন্ডায়া। পরনে ছিল ভ্যালেন্টিনোর তৈরি করা বেবি পিঙ্ক স্ট্র্যাপলেস গাউন, গলায় ছিল ইতালীয় ফ্যাশন হাউস বুলগারির হিরার নেকলেস আর হাতে ব্রেসলেট। গাউনের নিচের অংশ বা ট্রেইন তৈরি করা হয়েছিল ১৯০টি গোলাপ ফুল দিয়ে। হাতে বোনা প্রতিটি গোলাপ ফুল তৈরি করতে সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা। মোট ১ হাজার ২৩০ ঘণ্টা লেগেছে পুরো পোশাকটি তৈরি করতে। ভ্যালেন্টিনোর ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর পিয়েরপাওলো পিক্কোলির মতে, জেন্ডায়ার প্রত্যাবর্তনের কাছে এই পরিশ্রম মামুলি।
মূল অ্যাওয়ার্ড শোতে দেখা মিলেছিল আরেক জেন্ডায়ার। ভ্যালেন্টিনোর গাউন ছেড়ে তিনি গায়ে চড়িয়েছিলেন আরেক ইতালীয় ফ্যাশন কোম্পানি আর্মানির সাটিন স্লিপ ড্রেস। কালো, আকাশি ও গোলাপির মিশ্রণে তৈরি করা হয়েছিল এই পোশাক। আর্মানির ২০২৩ বসন্ত কালেকশনের অংশ ছিল এই পোশাক। দেখে ভড়কে গিয়েছিলেন তাঁর সহসঞ্চালক অভিনেতা পল মাসকেলও।
শুধু পোশাক নয়, জেন্ডায়া নজর কেড়েছেন তাঁর চুলের ছাঁট দিয়েও। লালগালিচায় আবির্ভূত হয়েছেন ষাটের দশকের অভিনেত্রীদের মতো ববকাট চুলে। ‘লুক ফ্যান্টাসটিক’-এর মতে, গত চার দিনে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই ‘ববকাট হেয়ারস্টাইল’-এর সার্চ বেড়ে গেছে প্রায় আড়াই গুণ।
তবে সব ছাড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লোকজনের নজর কেড়েছে জেন্ডায়ার অনামিকা। প্রতিটি অনুষ্ঠানে জেন্ডায়া এসেছিলেন একাই, কিন্তু তাঁর হাতের আংটি বলছে অন্য কথা। গত বছরের মাঝামাঝি স্পাইডারম্যান তারকা টম হল্যান্ডের সঙ্গে বিয়ের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন মাধ্যমে। সেই গুঞ্জনের পালে নতুন করে হাওয়া লাগল।
Add comment