Nazihar News Network

টিকটক যেভাবে তার অ্যাপের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করে

আজকের ডিজিটাল বিশ্বে অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আর নতুন কোন বিষয় নয়। প্রতিটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য এবং নিজেদের প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। একইভাবে দ্রুত বর্ধনশীল বিনোদন প্ল্যাটফর্ম টিকটক, তাদের অ্যাপটি নিরাপদভাবে ব্যবহারের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করছে।

আজকের ডিজিটাল বিশ্বে অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আর নতুন কোন বিষয় নয়। প্রতিটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য এবং নিজেদের প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। একইভাবে দ্রুত বর্ধনশীল বিনোদন প্ল্যাটফর্ম টিকটক, তাদের অ্যাপটি নিরাপদভাবে ব্যবহারের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করছে।

টিকটক বিভিন্ন নীতি প্রতিষ্ঠা করছে যা এর কমিউনিটিকে অনলাইন সুরক্ষা বিষয়ে শিক্ষা দেয়। প্রত্যেকের জন্য কীভাবে একটি নিরাপদ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা যায় সেটিও এখানে জানা যায়। টিকটকের বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম হল #সেফারটুগেদার শিরোনামে সেফটি অ্যাম্বাসেডর প্রোগ্রাম ক্যাম্পেইন যেটি বাংলাদেশে টিকটকের প্রথম অফলাইন অ্যাক্টিভেশন। টিকটকের সর্বশেষ উদ্যোগের লক্ষ্য ছিল ব্যবহারকারীদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিরাপত্তা বজায় রেখে সময় উপভোগ করতে উত্সাহিত করা।

প্রযুক্তি ও হিউম্যান মডারেশনের মাধ্যমে টিকটক এর ব্যবহারকারী ও ক্রিয়েটরদের জন্য একটি ইতিবাচক ডিজিটাল পরিবেশ নিশ্চিত করে।এই বিনোদন প্ল্যাটফর্মটি এর কমিউনিটিকে অ্যাপে বিদ্যমান ফিচারের মাধ্যমে নিরাপদে অ্যাপ ব্যবহারে সহায়তা করে।

নিরাপদে টিকটক ব্যবহারের জন্য কিছু ফিচার:

অ্যাকাউন্ট প্রাইভেসি সেট

ব্যবহারকারী চাইলে তার অ্যাকাউন্ট প্রাইভেট রাখতে পারবেন। তারা ফলোয়িং রিকোয়েস্ট গ্রহণ বা বাতিল করতে পারেন এবং শুধু ফলোয়ার বা অনুসারীরাই তার কনটেন্ট দেখতে পারবেন এমন ব্যবস্থাও করতে পারেন। যদি কোনোভাবে ব্যবহারকারী ১৬ বছরের কম বয়সী হোন, তাহলে তাদের অ্যাকাউন্ট খোলার সময় থেকেই ডিফল্ট আকারেই সেটি প্রাইভেট হবে। অন্যদিকে, পাবলিক অ্যাকাউন্ট সবাই দেখতে পারবে, কমেন্ট করতে পারবে এবং সে অ্যাকাউন্টের কনটেন্টও শেয়ার করতে পারবে।

ফ্যামিলি পেয়ারিং ফিচার ব্যবহার

অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কিশোর-কিশোরীদের নিরাপদ রাখতে সবচেয়ে উপকারী ফিচারটির নাম ফ্যামিলি পেয়ারিং। এই ফিচারটি মা-বাবাকে তাদের সন্তানদের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নিজেদের অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করতে দেয়। ফলে তারা চাইলেই তার সন্তানদের কনটেন্ট এবং প্রাইভেসির বিষয়টি সেট করে দিতে পারেন। এমনকি অভিভাবকরা চাইলে তাদের নিজেদের স্মার্টফোন থেকেই সন্তানের অনলাইন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেন।

ভিউয়ার নিয়ন্ত্রণ

ব্যবহারকারী ভিডিও পোস্ট করার সময় কারা সেটি দেখতে পারবে তা নির্ধারিত করে দিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ‘ফ্রেন্ড’ সিলেক্ট করে দিলে অন্যরা সেই ভিডিওটি দেখতে পারবেন না।

মেসেজ নিয়ন্ত্রণ

ব্যবহারকারীকে কারা মেসেজ করতে পারবেন সেটি নির্ধারিত ও বেছে নেয়া যাবে। কয়েকটি বিকল্প থেকে ব্যবহারকারী বেছে নিতে পারবেন কারা সরাসরি তাদের মেসেজ দিতে পারবেন। ‘এভরিওয়ান’, ‘ফ্রেন্ডস’ (ফলোয়ার, যাদের ফলো ব্যাক করা হয়েছে) অথবা ‘নো ওয়ান’- এর যেকোনো অপশন সিলেক্ট করা যাবে। যদিও ডিরেক্ট মেসেজ অপশনটি শুধু রেজিস্ট্রার করা অ্যাকাউন্টধারীরাই (১৬ বছর ও তার বেশি বয়সীরা) পাবেন। আর অভিভাবকরা চাইলে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে তার সন্তানের অ্যাকাউন্টে মেসেজ পাঠানো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

কমেন্ট নিয়ন্ত্রণ

ডিফল্ট হিসেবে ১৬ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে মন্তব্য শুধুমাত্র ‘ফ্রেন্ড’ করে রাখা হয়। তারা অবশ্য চাইলে এটি ‘ফ্রেন্ড’ কিংবা ‘নো ওয়ান’ করে নিতে পারেন। ব্যবহারকারী যারা ১৬ বছরের উপরে, তারা চাইলে ‘এভরিওয়ান’, ‘ফ্রেন্ড’ কিংবা কমেন্ট অফ করেও রাখতে পারেন।

কমেন্ট ফিল্টার

স্বতন্ত্র এই ফিচারটির সঙ্গে ব্যবহারকারীরা দুটি উপায়ে মন্তব্য ফিল্টার করতে পারেন। প্রথমটি হল, টিকটকের স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম ব্যবহার যা আপত্তিকর মন্তব্যগুলো সনাক্ত করে লুকিয়ে ফেলে। আরেকটি উপায় হলো, যেসব বিষয়ে কমেন্ট ফিল্টার করতে চান সেসব কীওয়ার্ডগুলোর একটি কাস্টম তালিকা তৈরি করা যেখানে সে শব্দগুলো দিয়ে করা যেকোনো কমেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সরে যাবে।

ডুয়েট ও স্টিচ নিয়ন্ত্রণ

কে আপনার সঙ্গে ডুয়েট করতে পারবে তা নির্ধারণ করতে অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসি সেটিংসে ‘এভরিওয়ান’ বা ‘ফ্রেন্ড’ বেছে নিন। এমনকি আপনি একটি নির্দিষ্ট ভিডিওতেও ডুয়েট চালু বা বন্ধ করতে পারেন। পাবলিক অ্যাকাউন্টধারীরা এবং ১৬ বা তার বেশি বয়সের কনটেন্ট ক্রিয়েটররা শুধুমাত্র ডুয়েট করতে পারবে। একই নিয়ম স্টিচের জন্যও প্রযোজ্য।

‘ফর ইউ’ ফিড নিজের মতো গড়ুন

নির্দিষ্ট কোনো ধরনের ভিডিও এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ‘নট ইন্টারেস্টেড বা আগ্রহী নয়’ অপশনটি সিলেক্ট করুন। টিকটকের পরিষেবার শর্ত বা কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘন করে এমন ভিডিওগুলো হাইড বা রিপোর্ট করতে পারেন। এছাড়া, ব্যবহারকারীরা শব্দ, হ্যাশট্যাগ, লাইভ স্ট্রিম, ব্যবহারকারী, ডিএম বা সরাসরি কমেন্ট সম্পর্কেও রিপোর্ট করতে পারেন। সে জন্য রিপোর্ট করতে ভিডিওটিতে দীর্ঘক্ষণ ট্যাপ করে রাখুন এবং সেখানে দেখানো পপ-আপ অপশনটি সিলেক্ট করে রিপোর্ট করুন।

রেস্ট্রিক্টেড মোড প্রয়োগ করুন

এই ফিচারে ব্যবহারকারীরা যেকোনো অনুপযুক্ত কনটেন্ট এড়াতে পারবেন। অ্যাকাউন্ট সেটিংস থেকে এই ধরনের কনটেন্টের উপস্থিতি ব্যবহারকারীরা  সীমিত করতে পারেন যেহেতু রেস্ট্রিক্টেড মোড সবসময় বন্ধ করা যেতে পারে। এছাড়াও ফ্যামিলি পেয়ারিং কার্যকর করে অভিভাবকরাও এটি চালু করতে পারেন।

স্ক্রিনটাইম সীমাবদ্ধ করা

ডিজিটাল সুস্থতার জন্য, স্ক্রিনটাইম ম্যানেজমেন্ট ফিচার অ্যাপ ব্যবহারকারীদের সেখানে সময় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এই ফিচারটি চালু করলে ব্যবহারকারীদের একটি পাসকোড দেওয়া হবে যা দিয়ে টিকটক অ্যাপটি আবার চালিয়ে যেতে পারবেন।

উল্লিখিত ফিচারগুলো ছাড়াও, টিকটক বেশকিছু গাইড ডিজাইন করেছে যা ডিজিটাল নিরাপত্তার উপায়, নীতি এবং সুরক্ষার টুলগুলোকে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করে। এটিও স্পষ্ট যে, টিকটক ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য এর স্বতন্ত্র ফিচারগুলোর মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের নিরাপত্তার উপর জোর দিয়েছে।

পিতামাতা বা প্রাপ্তবয়স্ক থেকে শুরু করে তরুণ ব্যবহারকারী, সকলকেই সাইবার বুলিং আর ক্ষতিকর কনটেন্ট এর মতো সাইবারস্পেসের সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা এখন অত্যাবশ্যক। এ বিষয়ে টিকটক একটি নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। তবে, এটি তখনই আরও ত্বরান্বিত হবে যখন এর ব্যবহারকারীরা নিরাপদ সীমানা বজায় রেখে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহারে এগিয়ে আসবে।

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.